শুধু কণ্ঠেই নয়, লেখাপড়াতেই অদম্য কিশোরগঞ্জের দুই যমজ বোন। এবার সদ্য প্রকাশিত এসএসসি ও সমমান পরীক্ষার ফলাফলে চমক দেখিয়েছে দুই যমজ বোন তাহিয়া তাবাসসুম, ফাউজিয়া তারান্নুম ও তাদের আরেক বোন উম্মে আতিয়া উমামা।
জানা যায়, কিশোরগঞ্জ জেলা সদরের ঐতিহ্যবাহী শিক্ষা প্রতিষ্ঠান হয়বতনগর এ ইউ কামিল মাদরাসা থেকে এবার দাখিল পরীক্ষায় অংশ নেন, শহরের নগুয়া এলাকার বাসিন্দা মো. আলীম উদ্দিন ও নূরুন্নাহারের তিন মেয়ে যমজ বোন তাহিয়া তাবাসসুম, ফাউজিয়া তারান্নুম ও তাদের আরেক বোন উম্মে আতিয়া উমামা। আতিয়া দু’জনের চেয়ে এক বছরের বড়। এই তিন জনই জিপিএ-৫ পাওয়ার গৌরব অর্জন করে। আর এই সাফল্যে তাদের পরিবারে বইছে খুশির আমেজ।
মেধাবী তিন বোনের গ্রামের বাড়ি জেলার করিমগঞ্জ উপজেলার দক্ষিণ নানশ্রী গ্রামে। বাবা মো. আলীম উদ্দিন স্থানীয় একটি মাদ্রাসার সহকারী মাওলানা হিসেবে কর্মরত। ৫ বোন দুই ভাইয়ের মধ্যে বড়ভাই রাবিবুল হাসান সফটওয়ার ইঞ্জিনিয়ার। বড় দুই বোন সুমাইয়া আক্তার ও উসরাত জাহান মারিয়া কামিল শ্রেণিতে পড়ছে। আর ছোটভাই নকিবুল হোসেন জারিফ হাফিজি পড়ছে।
বাবা আলীম উদ্দিন জানান, আমার তিন মেয়ের মধ্যে তাহিয়া তাবাসসুম ও ফাউজিয়া তারান্নুম যমজ। অপরজন উম্মে আতিয়া উমামা এক বছরের বড়। তারা একসঙ্গে স্কুলে ভর্তি হয়। তিনজনই এবার জিপিএ-৫ পেয়েছে। তাদের সাফল্যে আমরা গর্বিত। আমি চাই তারা যেন ভবিষ্যতে লেখাপড়া শিখে প্রকৃত মানুষ হিসেবে গড়ে উঠতে পারে। তাদের এই সাফল্যে আমার পরিবার ও মাদ্রাসা শিক্ষকদের অবদান রয়েছে। আর সন্তানদের কঠোর পরিশ্রম এ সফলতা এনে দিয়েছে।
তাদের বড় ভাই রাবিবুল হাসান জানান, লেখাপড়ার প্রতি তাদের প্রবল আগ্রহ ছিলো। ফজরের নামাজ পড়েই তারা বই নিয়ে বসেছে। অমরা সাধ্যমতো তাদের সহযোগিতা দিয়েছি। তাদের এই সাফল্যে আমরা গর্বিত। ভবিষ্যতে যেন তারা কাঙ্ক্ষিত সফলতার মুখ দেখতে পারে সেটাই কামনা করি।
বাবা ও শিক্ষকদের অকৃত্রিম সহযোগিতা ও নিজেদের পরিশ্রমে সফলতা ধরা দিয়েছে বলে মনে করেন তিন বোন। লেখাপড়া শেষ করে ভবিষ্যতে বিচারক হিসেবে নিজেদের প্রতিষ্ঠিত করার ইচ্ছে আছে ধর্মীয় অনুশাসন মেনে চলা এই তিন মেধাবী শিক্ষার্থীর।
জেলার ঐতিহ্যবাহী শিক্ষা প্রতিষ্ঠান হয়বতনগর এ ইউ কামিল মাদ্রাসা থেকে এবার দাখিল পরীক্ষায় ৭০ জন শিক্ষার্থী পরীক্ষায় অংশ নেয়। তাদের মধ্যে ৬৩ জন পাশ করেছে। তিন বোনসহ জিপিএ-৫ পেয়েছে ৩২ জন। আর তাদের এমন ঈর্ষণীয় সাফল্যে খুশি মাদ্রাসার শিক্ষকরাও।
শিগগিরই অন্য মেধাবীদের সঙ্গে তিন বোনকে সংবর্ধনা দেয়া হবে বলে জানান, হয়বতনগর এ ইউ কামিল মাদ্রাসার অধ্যক্ষ মোহাম্মদ আজিজুল হক। তিনি জানান, এটা আমাদের প্রতিষ্ঠানের জন্য গৌরবের যে, একই বাবা-মায়ের তিন সন্তান এক সঙ্গে ভালো ফলাফল অর্জন করেছে। আর তাদের মধ্যে দু’জন যমজ। আমি তাদের সফলতা কামনা করছি।