Home Uncategorized ৯ বছরেও শেষ হয়নি শোলাকিয়ায় জঙ্গি হামলার বিচার

৯ বছরেও শেষ হয়নি শোলাকিয়ায় জঙ্গি হামলার বিচার

1

২০১৬ সালের ৭ জুলাই ঈদুল ফিতরের দিন সকালে কিশোরগঞ্জ শহরে ঈদগাহমুখী মানুষের ঢল। নামাজ শুরুর আগেই ভয়াল এক বিস্ফোরণ কাঁপিয়ে দেয় পুরো এলাকা। শহরের আজিমউদ্দিন উচ্চবিদ্যালয়ের পাশে, মুফতি মোহাম্মদ আলী মসজিদসংলগ্ন সড়কে পুলিশের চেকপোস্টে হামলা চালায় জঙ্গিরা। রাজধানীর গুলশানের হোলি আর্টিজান হামলার ছয় দিন পর দেশের সবচেয়ে বড় ঈদের জামাতস্থলে এই হামলা আতঙ্ক ছড়িয়ে দেয় দেশজুড়ে।

সেদিনের হামলায় কনস্টেবল আনছারুল হক, জহিরুল ইসলাম ও গৃহবধূ ঝরনা রানী ভৌমিক নিহত হন। নিহত হন এক জঙ্গি আবির হোসেন। আহত হন আরও ১২ পুলিশ সদস্য ও চার মুসল্লি। গুলির আঘাতে নিহত ঝরনা রানীর স্মরণে হামলার স্থানের গলিটির নাম রাখা হয়েছে ‘ঝরনা রানী ভৌমিক সড়ক’। আট বছর পরও সেই গলির বাসাবাড়ির দেয়ালে গুলির দাগ এখনো রয়ে গেছে।

ঘটনার তিন দিন পর পাকুন্দিয়া থানার তৎকালীন ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মো. সামসুদ্দীন বাদী হয়ে সন্ত্রাসবিরোধী আইনে কিশোরগঞ্জ মডেল থানায় মামলা করেন। মামলায় ২৪ জনকে আসামি করা হয়। এদের মধ্যে ১৯ জন আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সঙ্গে ‘বন্দুকযুদ্ধে’ নিহত হন। বেঁচে থাকা পাঁচ আসামির মধ্যে চারজন বর্তমানে কারাগারে এবং একজন জামিনে রয়েছেন। মামলা বর্তমানে ঢাকার সন্ত্রাস দমন ট্রাইব্যুনাল-২–এ বিচারাধীন।

সরকারি কৌঁসুলি জালাল উদ্দিন বলেন, ১০১ জন সাক্ষীর মধ্যে ৭২ জনের সাক্ষ্য গ্রহণ শেষ হয়েছে। আগামী ১৭ আগস্ট পরবর্তী সাক্ষ্য গ্রহণের তারিখ নির্ধারিত আছে। দ্রুত বিচারকাজ শেষ করে দোষীদের সর্বোচ্চ শাস্তি নিশ্চিত করার প্রত্যাশা জানান তিনি।

নিহত ঝরনা রানীর দুই ছেলে বাসুদেব ভৌমিক ও শুভদেব ভৌমিক আজও বিচারের অপেক্ষায়। শুভদেব বর্তমানে পটুয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী। তিনি বলেন, ‘আমাদের মা নির্মমভাবে খুন হয়েছেন। বিচার না দেখে বাবা মারা গেছেন। আমরা এখন শুধু ন্যায়বিচার চাই।’

ঘটনার দিন হামলায় আহত পুলিশ কনস্টেবল রফিকুল ইসলাম বলেন, ‘তল্লাশি চৌকিতে পুলিশের তৎপরতা না থাকলে জঙ্গিদের পরিকল্পনা ভয়াবহ রূপ নিত।’

এ বিষয়ে কিশোরগঞ্জের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (প্রশাসন ও অর্থ) মুকিত সরকার বলেন, ‘মামলার অভিযোগপত্র দেওয়া হয়েছে। সাক্ষ্য গ্রহণ প্রায় শেষ। আদালত সকল সাক্ষ্য প্রমাণ বিবেচনায় রায় দেবেন। আমরা ন্যায়বিচার প্রত্যাশা করছি।’

NO COMMENTS

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here