কিশোরগঞ্জের ভৈরবে মোবাইল চুরির অভিযোগে এক যুবককে গাছে বেঁধে তিন দিন ধরে নির্যাতন করেছেন এক ইউনিয়ন পরিষদ (ইউপি) সদস্য ও তাঁর অনুসারীরা। ওই সময় যুবকের মাথা ন্যাড়া করে শরীরে রং ঢেলে দেওয়া হয়। এ ঘটনায় সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়া একটি ভিডিওর ভিত্তিতে পুলিশ আজ শনিবার দুপুরে ওই যুবককে উদ্ধার করেছে।
ঘটনাটি ঘটেছে ভৈরব উপজেলার শ্রীনগর ইউনিয়নের শ্রীনগর গ্রামে। অভিযুক্ত ইউপি সদস্যের নাম জামাল মিয়া। তিনি শ্রীনগর ইউনিয়নের ৬ নম্বর ওয়ার্ডের মেম্বার এবং ওয়ার্ড যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক। উদ্ধার হওয়া যুবকের নাম ইমন মিয়া (২২)। তিনি ভৈরব পৌর এলাকার কালীপুর রামশংকরপুর গ্রামের বাসিন্দা।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, গত বুধবার (১৮ জুন) রাতে মোবাইল চুরির অভিযোগে ইমনকে আটক করে এলাকাবাসী। এরপর তাঁকে জামাল মেম্বারের কাছে সোপর্দ করা হয়। অভিযোগ, তিন দিন ধরে ইমনকে জামাল মেম্বারের বাড়ির একটি গাছে বেঁধে রাখা হয়। এ সময় এলাকার কিছু যুবকের সহায়তায় ইমনের মাথার অর্ধেক চুল ফেলে দিয়ে মাথা ও শরীরে লাল রং ঢেলে দেওয়া হয়। ঘটনাটি দেখতে আশপাশের গ্রাম থেকে লোকজন ভিড় করেন।
শনিবার (২১ জুন) দুপুরে বিষয়টি জানার পর ভৈরব থানার উপপরিদর্শক (এসআই) শাহাদাৎ হোসেন ফোর্সসহ ঘটনাস্থলে যান। পরে গাছ থেকে ইমনকে উদ্ধার করে থানায় নিয়ে যাওয়া হয়।
এ বিষয়ে জানতে ইউপি সদস্য জামাল মিয়ার মোবাইল নম্বরে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলে সেটি বন্ধ পাওয়া যায়। তবে ভাইরাল হওয়া একটি ভিডিওতে দেখা যায়, পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছার পরও ইমন গাছে বাঁধা অবস্থায় ছিলেন। তখন জামাল মিয়া জানান, তাঁর ও তাঁর ভাইয়ের দুটি মোবাইল চুরি হওয়ায় এলাকাবাসী ইমনকে ধরে নিয়ে আসে। তিন দিন ধরে যুবকটি তাঁর হেফাজতে ছিল বলেও স্বীকার করেন তিনি।
ভৈরব থানার এসআই এহসানুল কবির আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘ইমন একজন চিহ্নিত চোর। তাঁকে এর আগেও গ্রেপ্তার করে চালান দেওয়া হয়েছিল। তাঁকে থানায় আনা হয়েছে, আইনানুগ ব্যবস্থা প্রক্রিয়াধীন।’ তবে ইউপি সদস্য জামাল মিয়ার বিরুদ্ধে কোনো আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে কি না, এ বিষয়ে তাৎক্ষণিকভাবে কিছু জানাতে পারেননি তিনি।