Home কিশোরগঞ্জ পাগলা মসজিদে প্রথম ২৪ ঘন্টায় অনলাইনে দান এলো ৬০২১০ টাকা

পাগলা মসজিদে প্রথম ২৪ ঘন্টায় অনলাইনে দান এলো ৬০২১০ টাকা

2

কিশোরগঞ্জের ঐতিহাসিক পাগলা মসজিদের নিজস্ব ওয়েবসাইটের উদ্বোধন করা হয়েছে শুক্রবার (৪ জুলাই) বেলা সাড়ে ১১টার দিকে। এরপর থেকে অনলাইনে দান করা যাচ্ছে মসজিদটিতে।

শনিবার (৫ জুলাই) বেলা ১১টা পর্যন্ত প্রথম ২৪ ঘন্টায় অনলাইনে দান জমা পড়েছে ৬০ হাজার ২১০টাকা ১১ পয়সা। বিকাশসহ বিভিন্ন পেমেন্ট গেটওয়ে ব্যবহার করে মানুষ এই টাকা দান করেছেন।

পাগলা মসজিদ কমিটির সদস্য সচিব ও কিশোরগঞ্জ সদর উপজেলা নির্বাহী অফিসার মো. এরশাদ মিয়া বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।

উপজেলা নির্বাহী অফিসার মো. এরশাদ মিয়া জানান, পাগলা মসজিদের ওয়েবসাইট (www.paglamosque.org) উদ্বোধনের পর এর মাধ্যমে অনলাইনে দেশ ও বিদেশের যেকোনো প্রান্তের মানুষ ঘরে বসে মসজিদটিতে দান করতে পারছেন। বিকাশ, রকেট কিংবা ডেবিট ও ক্রেডিট কার্ড ব্যবহার করে অনলাইনে দান করতে পারছেন ওয়েবসাইট ব্যবহারকারীরা।

পাগলা মসজিদের একটি ব্যাংক একাউন্টে সরাসরি অনলাইনে দেওয়া দানের টাকা জমা হয়। এছাড়া প্রতি মুহূর্তে জমা হওয়া দানের পরিমাণ জানা যায়।

বিষয়টি একেবারে নতুন এবং অনেকে এখনো জানেন না, এরপরও প্রথম দিনেই ওয়েবসাইট ব্যবহারের মাধ্যমে অনলাইনে দান করার ক্ষেত্রে মানুষের আগ্রহ বেশ আশাপ্রদ।

এর আগে শুক্রবার (৪ জুলাই) ঐতিহাসিক পাগলা মসজিদের নিজস্ব ওয়েবসাইটের উদ্বোধন করার সময়ে কিশোরগঞ্জের জেলা প্রশাসক (যুগ্ম সচিব) ফৌজিয়া খান তার বক্তব্যে বলেন, দেশ ও বিদেশের বিভিন্ন স্থান থেকে মানুষজন পাগলা মসজিদে দান করার জন্য এসে থাকেন। যারা এই কষ্ট স্বীকার করে আসতে পারেন না, তারা পাগলা মসজিদে দান পাঠানোর জন্য কখনো কখনো প্রতারণারও শিকার হন।

তাই দেশে ও বিদেশের সকল প্রান্ত থেকে ঘরে বসে মানুষ যেন পাগলা মসজিদে তার দান করার আকাঙ্ক্ষা পূরণ করতে পারেন, সেই লক্ষ্যে আমরা এই ওয়েবসাইটটি প্রস্তুত করেছি।

এছাড়া এই ওয়েবসাইটের মাধ্যমে পাগলা মসজিদের ইতিহাস, ঐতিহ্য, নামাজের সময়সহ বিভিন্ন তথ্যাদি জানার সুযোগ সৃষ্টি হবে।

এদিকে অনলাইনে পাগলা মসজিদে দান করা যাওয়ার বিষয়টি জানাজানি হওয়ার পর এ নিয়ে কৌতূহলের সৃষ্টি হয়েছে। নেটিজেনরা সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে তাদের নানা রকম প্রতিক্রিয়া দিচ্ছেন। অনেকেই কেবল দান গ্রহণের ব্যাপারে উদ্যোগ নয় পাগলা মসজিদকে একটি নান্দনিক স্থাপনা হিসেবে প্রতিষ্ঠা করার আকাঙ্ক্ষার কথা ব্যক্ত করেছেন।

কিশোরগঞ্জ জেলা শহরের পশ্চিমে হারুয়া এলাকায় নরসুন্দা নদীর তীরে প্রতিষ্ঠিত ঐতিহাসিক পাগলা মসজিদ শুধু কিশোরগঞ্জ নয় সমগ্র দেশবাসীর কাছে একটি আবেগের জায়গা।

এই মসজিদে প্রতিদিনই দেশের বিভিন্ন প্রান্তের মানুষ এসে দান করেন। এ কারণে প্রতিবারই বাড়ানো হয় দান সিন্দুকের সংখ্যা। দানসিন্দুক খুললে টাকা ছাড়াও স্বর্ণালংকার ও বৈদেশিক মুদ্রা পাওয়া যায়।

বর্তমানে প্রায় ৯০ কোটি টাকা পাগলা মসজিদের ব্যাংক হিসাবে জমা রয়েছে। সাধারণত তিন মাস পর পর মসজিদের দানসিন্দুক খোলা হয়। সর্বশেষ গত ১২ই এপ্রিল দান সিন্দুকগুলো খোলার পর এ যাবতকালের সর্বোচ্চ ৯ কোটি ১৭ লাখ ৮০ হাজার ৬৮৭ টাকা পাওয়া গিয়েছিল।

সময়ের বিবর্তনে আজ এ মসজিদের পরিধি যেমন বেড়েছে, তেমনি বেড়েছে এর খ্যাতি ও ঐতিহাসিক মূল্যও। বর্তমানে ৩.৮৮ একর ভূমির উপর সমপ্রসারিত পাগলা মসজিদ এলাকায় মসজিদকে কেন্দ্র করে একটি অত্যাধুনিক ধর্মীয় কমপ্লেক্স প্রতিষ্ঠা করা হয়েছে। স্বভাবতই ঐতিহাসিক এই মসজিদকে নিয়ে জেলার ধর্ম-বর্ণ-সমপ্রদায় নির্বিশেষে সকলেই গর্ববোধ করেন।

NO COMMENTS

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here